নিজস্ব প্রতিনিধি, রবিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৩, পূর্ব বর্ধমান: ৪০০ বছর পুরাতন রাজ আমলের প্রথা মেনেই রবিবার প্রতিপদে বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলার ঘট উত্তোলন ও প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়েই বর্ধমান সহ রাঢ়বঙ্গের শারদ উৎসবের সূচনা হল। এখন রাজ আমলের প্রথা অনুযায়ী মহালয়ার পরের দিন প্রতিপদে রূপোর ঘটে কৃষ্ণসায়ের থেকে ঘট উত্তোলন করা হয়। সেই ঘট ঘোড়ার গাড়িতে করে বাদ্যযন্ত্র সহকারে শোভাযাত্রা মধ্যে দিয়ে মন্দিরে আনা হয়।
মন্দিরে ঘট এনে প্রথা মেনে সংকল্পের মধ্যে দিয়ে দুর্গাপূজো সূচনা হয়। এই ঘট উত্তোলনে উপস্থিত মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি তথা পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার, বর্ধমান দক্ষিনের বিধায়ক খোকন দাস, পুলিশ সুপার আমনদীপ সহ শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। মা সর্বমঙ্গলা মন্দির নবরত্ন মন্দির হওয়ায় প্রতিপদ থেকে ন’দিন ধরে চলে চন্ডীপাঠ। নবমীর দিন ন’টি কুমারী মেয়ে কে দিয়ে কুমারী পূজো। এই মন্দিরে আগে পশু-বলি প্রথা চালু থাকলেও বর্তমানে তা বন্ধ। তার বদলে মিষ্টি ও ফল বলি হয় বলে জানান মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সঞ্জয় ঘোষ।
প্রসঙ্গত, ১৭০২ সালে স্বপ্নাদেশ পেয়ে চুনুরীদের কাছে থাকা দামোদর নদের পার থেকে উদ্ধার করে দেবী সর্বমঙ্গলাকে বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচাঁদ মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। তখন থেকেই বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলা। এখানে দেবী কষ্টিপাথরের অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী, রুপোর সিংহাসনে মা আসীন। আগে সন্ধি পুজোয় কামান দাগা হতো; মেষ, মহিষ ও ছাগ বলি হতো। বর্তমানে আর তা হয় না। সন্ধিপুজোয় কামানের আওয়াজ শুনে আশেপাশের সমস্ত জমিদার বাড়িতে সন্ধিপুজো শুরু হতো। নবমীতে হয় নবকুমারী পুজো। স্বাভাবিক ভাবে সর্বমঙ্গলা পুজোকে ঘিরে আনন্দে মতোয়ারা বর্ধমান সহ রাঢ়বঙ্গ বাসী।